Tuesday, March 15, 2011

সুপ্ত!



অভ্র আড়ালে ঢাকা পরা শশী  কিংবা
থমকে যাওয়া তটিনী মতো,
দিবস হারানো কোন পথচারী কিংবা
বাক্য হারানো কোন শাসকের দৃষ্টিতে
আমি লুকাতে চাই।

আমি সবিতার আলোয় স্নান চাই না
যামিনীতে দাও আবাস,
আমি রং ধনুর রং ছেড়ে
নীরদে করি বসবাস।

নন্দিনীর ছড়ানো কুন্তলে আমি
নিবির নিলয় চাই না,
মহিমার ঐ লোচনে খেলে যাওয়া বিজলিতে
আমি পথ খুজি না।

আমি জল হতে বরফের মাঝে
অনল হতে জীবনের খোঁজে,
অস্থির চিত্তকে করি অনুগত
মন্থর করিতে অন্তর।

বিভব আমি চাই না,
হতে চাই না কোন ভূপালের নন্দন।
নাই বা হয়াছি কোন অভিরাম,
ক্ষীণ কায়ায় নেইকো পরিতাপ।

আমি দেখেছি বসন জড়ান তোমায়
ঠিক যেন দু’পাতার মাঝখানে লুকিয়া থাকা উপল,
আমি দেখেছি তোমায় নিরব নিলয়ে,
শর্বরী তে করো অর্চনা।
তোমাতে লুকাও তুমি, তোমার মতো করে
আপন গিরিতে রেখে অনল।
আমি তোমাতে শিখি দিবানিশি
আর আপনাতে করি অনল সঙ্গম,
আপন হৃদয়কে অনলে পুড়িয়ে
তোমার লোচনে হই সুপ্ত ঠিক তোমার মতো করে।  

Tuesday, March 8, 2011

শ্রাবনের মেঘ.


বারবার ভাবি, আমি আমাতেই ভালো,
শ্রাবনের অভ্র পানে চেয়ে আর
অক্ষিতে বারি জমাবো না।
আপন লোচনে যে জমা জল,
তাতেই ভিজে নিজেকে করি সজল,
দক্ষিণা সমীরণের আশায় ঐ তটে আর হাঁটিব না।

শ্রাবনের মেঘ
যেন চৈত্রের আকাশে,
কখনো এক চিলতি হাসি কিংবা
হটা ঝড়ে যাওয়া ক’ফোটা জল।
আর আমি??
চৈত্রের খরতাপে পোড়া একমুষ্টি ছাই !
কখনো ভিজে মৃত্তিকায় একাকার,
কখনো শুখিয়ে বাতাসের হস্ত ধরে,
তোমার দেহে করি ঠাই, বিনম্র বসবাসের আশায়।

কিন্তু !! আবার সেই শ্রাবনের মেঘের বারি,
তোমার কায়া হতে আমায় করে আড়ি।
আমি আবার পথ-গিরি ধরে,
অলকের ঘ্রান শুঁকে তোমারই খোঁজে,
ঘুরি এই বসুমতি, নিজকে করি নিরলস।

শ্রাবণের মেঘ!! এ যে মরিচিকা,
শশিকে হাসিয়ে রবির চোখে আনে জল।
দিবসে আনে রজনীর ছায়া,
রজনীতে সাদা কালো মেঘের খেলায়
চপলা হেসে যায়, আর আমি দেখি তোমার বদন।

আবার শ্রাবনের মেঘ,
আবার এক চিলতে হাসি কিংবা
হটা ঝরা ক’ফটা জল।
আর আমি??
তোমাকেই খুজে ফিরা- এক থেকে শুন্য অবধি।


Sunday, February 27, 2011

দু’টি কবিতা


 ১.
শহরের এক প্রান্ত হতে
ধুলো দের অন্য প্রান্তে ছুটে চলা,
তোমার গায়ের ধুলরাশি,
আমার গায়ে হয় জমা ।
তব তুমি দাওনি কেন বাধা,
যদি মান তোমার আছে ভিন্ন গ্রহ !!

আমার চোখের অশ্রু,
বাতাসে মিশে হলো মেঘ,
মেঘের কান্নার জলে
তুমি করেছ স্নান বেশ !
তব কেন বৃষ্টির মিষ্টি জলে তৃষা মিটিয়া,
আমার অশ্রুতে দিয়াছ থুতু !


২।

নিয়তি কে দেখ,
লাল নীল সুতই বোনা কোন চাদরের মাঝে।
তোমার বদনের হাসি মিশে
কারো নয়নের জলে,
আবার সেই জল ই মেঘ হয়া ফিরে আসে
তোমারই সকাশে।

যৌবনের মিছিলে তুমি যখন
সামনের সারিতে,
মা ফিরে মিছিলের পিছনে
দাদী কে রেখে ঘরে।
তোমার যে এবার ঘরে ফিরার সময়,
তবে মাকে রাখিবে কোন কোণে?

Friday, February 25, 2011

সুপ্তি !


তোমার নিস্পলক তাকিয়া থাকা কিংবা
একদল সাদা বক শুন্য আকাশে গন্থব্যহীন,
রাতের শেষ প্রহরে ঝরে পড়া একফোঁটা অশ্রু,
কিংবা শূলীতে ঝুলানো জীবন!
অনুভুতির এহেন কর্মে
আমি তোমায় দেখেছি বড়ই নির্বাক,
শুধু দৃষ্টিকে শুন্যে ভাসিয়ে
কোথায় যেন হয়েছ একাকার !!

তোমার বরফ জমা ভাবনায়
আমার ডুবার সাধ্য কি?
তোমার দূর শহর ছারিয়ে যাওয়া  দৃষ্টিতে
আমার দৃষ্টি মিলানোর সাহস কি?

আমি দেখছি তোমায় প্রলয়ের রাতে
দাঁড়িয়ে আছো বড়ই অনড়,
বিচ্যুত নও, বিচলিত নও, রয়েছ নির্বিকার।
প্রলয়ের ঝড়ে প্রকৃতি হয় একাকার,
আর তুমি !! শত আঘাত সয়ে তির্যক হাসিতে,
প্রকৃতিকে করেছো উপহাস।

তুমি কখনো সুপ্ত আগ্নিগিরির মাঝে,
যেন হাজার বছর ধরে আপন গৃহে বসবাস,
তবু অগ্নুপাতে নেই অভিলাষ।
না, না, তোমার অগ্নিতপাতে ও ভয় নেই !
এ যেন এক প্রজ্বলিত শিখা,
আলোকিত করে শহর থেকে শহর,
হৃদয় কে করে সমাগম।

তুমি কখনো গভীর হতে গভীর,
মহাসাগরের তলদেশ হতে আর গভীরে।
আমি তোমার গায়ে পাথর ছুড়ে দেখেছি,
আঁচড় কেটেছিল, রক্ত ঝরেছিল কিন্তু
শব্ধ ফুটেনি।

হাজার বাক্যবাণ ছুড়েছি তোমার প্রতি,
ভেবেছি ফিরবে কিছু শব্ধ,
না, কিছু নয়, হয়ত একটি কিংবা দুটি-
তাও অস্পষ্ট !!
তোমার এহেন গভীরতা আমায় বিমুগ্ধ করে,
তবুও হারাবার সাহস হয়না তোমাতে।

ভেবেছিলাম তোমায় দর্শন শিখাবো,
জীবনের দুএকটি কথা, অন্তিম হতে শুরুর কথা,
যখন বলতে শুরু করলাম,
তোমাতে সুপ্ত দর্শন আমাতে করিল গ্রাস,
আমি দর্শন শাস্রের শিস্য হলাম।

আমি তোমাকে আনন্দে দেখেছি,
উম্মাদনায় দেখেনি,
রাত্রির অগোচরে স্নিগ্ধ হাসিতে দেখেছি,
উল্লাসে মাতনি।
দেখেছি জীবন গন্তবের অভিমুখে তোমায়,
তুমি এক নিরব যাত্রী।

তুমি আমার সুপ্তি,
জীবনের এই কোলাহল থেকে অনেক দূরে,
অনুভুতির বলয়ের নিরব প্রলয়ে,
আমার সুপ্তির বসবাস !











Wednesday, February 23, 2011

আকাশের প্রেম!


মেঘেরা জমেছে আকাশ জুড়ে ,
তবুও বৃষ্টি না
আকাশের বিসন্নতা বাড়ে,
আপন বক্ষে ধরে রাখা সূর্য কে হাসাতে পারেনা।
মেঘেদের ছুটাছুটি আকাশের বুক ছিঁড়ে,

যেন আকাশ জুড়ে মেঘ, মেঘের উপর মেঘ জমে,
সাদা মেঘ কালো হয়ে যায় তবুও বৃষ্টি নামে না।


আকাশ বলে ও হে জমিন,
বল একি প্রতিদান ?
আপন অশ্রু যে তোমায় দিলাম,
বিনিময়ে মেঘ দিয়া কেন নিজেকে কর আড়াল?
জমিন বলে, ও হে আকাশ,
তোমার ভালবাসার প্রখর তাপে-
আমি যে হই পুড়ে ছাই,
তাইতো তোমায় মেঘ দিয়ে
আপনের মাঝে অনুভব বাড়াই।

আকাশ-জমিনের আহেন প্রেমের খেলা
ক্ষণে ক্ষণে  যে চলে,
আকাশের বুকে চাঁদ-তারার খেলায়
জমিন যে মেতে উঠে।

কখনো আলো আধারের খেলায়
হয় যে গোপন অভিসার,
কখনো আধারের ডেকে দিয়া শহর,
দুজনে হয় একাকার ।




কখনো জমিনের মাঝে সবুজের মেলায়
আকাশ যে মিলায় রং,
কখনো আকাশের খুনসুটিতে
জমিন যে হারায় ডং।

জমিন বলে, ও হে আকাশ-
মাঝে মাঝে তুমি এমন কেন?
মুহূর্তে জল ঝরিয়া হাসিতে রাঙ্গ,
আবার তুমি হাসি মিলায়ে কান্নায় মাত !
আকাশ বলে, ও হে জমিন,
তোমাতেই আমার সর্বসুখ,
তোমাকে পাবার অভিলাসে
আমার মঝে এত রুপ !! 

আকাশ-জমিনের এহেন প্রেম কত শতশত,
তবুও ভাবনায় মিলায় দুজন অবিরত।
জমিন জানে- আকাশ যে থাকে সুদুর,
সে কত যোজন যোজন দূর !
আপনার মাঝে তাই বাজে,
অব্যক্ত বেদনার সুর।

হয়ত নিয়মকে ভেঙ্গে দিয়া একদিন,
আকাশ-জমিন হবে একাকার।
সুদুরের পানে তাকিয়া আকাশ,
জমিনের মাঝে হাসি লুকায়।





Tuesday, February 22, 2011

প্রতীক্ষা


প্রতীক্ষা একফোঁটা জলের,
সুদুর আকাশ পানে মেঘের দিকে নিস্পলাক!!
মুহূর্ত হতে শত মুহূর্ত , দিন হতে মাস বছর,
এভাবে ই চলছে সময়- আশারা প্রহরায় ।

একটি চিঠির প্রতীক্ষা
কর্ণ কে পেতে রখেছে পাথের ধারে,
ডাক হরকরার ক্রিং ক্রিং শব্ধ আর ,
প্রিয় তমের একটু খবরে হাজার চিন্তার অবসান

কখনো প্রতীক্ষা একটি শব্ধ হতে পরের শব্ধে,
একটি শব্ধ কে অর্থ দিতে আর একটি শব্ধের আগমনের,
কখনো প্রতীক্ষা দূর হতে একটি শব্ধের আহবানের,
যে শব্ধে মিলে যায় দুটি মন !
কখনো প্রতীক্ষা একটি বাক্য হতে পরের বাক্য,
কখনো প্রতীক্ষা একটি চিঠি হতে পরের চিঠির,
কখনো প্রতীক্ষা সুদুরের অজানা অনুভুতির ।



কখনো সপ্ন দেখা স্বপ্ন ছোঁয়ার আশায়,
আশার শহরে বাধাহীন ছুটে চলা,
কখনো নয়নে ঘুম নেমে স্বপ্ন আসে,
কখনো নয়নের দৃষ্টিতে স্বপ্নরা ভেসে চলে,
স্বপ্ন ছোঁয়ার আশায় চলে আমার প্রতীক্ষা ।

প্রতীক্ষার প্রহর কাটে না, কিন্তু জীবন কেটে যায়,
প্রতীক্ষার হাত ধরে চলছে সময়,
তবু জীবন থেমে থাকেনা প্রতীক্ষায়।